মহাজাগতিক নিয়মে নয় পৃথিবীর নিয়মে বয়স বাড়তে লাগল।সকাল থেকে রুবি প্রিন্টার্স আর তার মেসিনের শব্দ।ওখানেই থাকত একটা ফোন।ফোন এলেই দেবেন কাকু ডাকত,বুবুন তোমাদের ফোন।ছোট পিসী বুদ্ধগয়া বেড়াতে গিয়ে করেছিল।আমি ভয়ে রিসিভার উল্টো করে ধরেছিলাম,কিছুই শুনতে পায়নি।
রামধীন আসতে ছাগল নিয়ে।ছাগলের দুধ খেতে হতো।সে একদম বিশ্রি।আসত মাটি চাই,মাটি চাই।কাঁপা বুড়ি এসে ডাকত,রাজপুত্তুর।আমি খুব ভয় পেতাম।একবার বড় পিসির ক্যাশ বাক্সোর সবটা টাকা দিয়ে দিয়েছিলাম।এতো ক্ষতিতেও বড় পিসি থুতনি ধরে আদর করে বলেছিল,আর দিস না, সোনা।
সন্ধেবেলা বেল ফুল আসত।চাই মালা।
তখন আসত মা।সোনারপুর নিম্ন বুনিয়াদিতে মা পড়াত।মায়ের এক ছাত্র মনে নেই,আমি বড়বেলায়ও দেখেছি।তবে সে আমাকে তেমন পছন্দ করত না।
সেই যে কাঁপাবুড়িকে দিয়েছিলাম,তারপর থেকে আর আসেনি।তার বদলে বসিরহাট থেকে আসত মনখুশি।সে সুর করে বলত,ইলিশ মাছের গন্ধ পেলে জিভেতে জল আসে।
এডুকেশন কর্নারে ভর্তি হলাম। বয়স নাকি তিন ছিল।সময়ের ঘড়ি যাঁদের হাতে থাকার কথা বলেছিলেন।
বোমা,বারুদ,পিকেটিং, ধর্মঘটের কলকাতা।পাড়া সন্ধে থেকেই শুনশান।পুলিশের গাড়ির টহল।টিয়ার গ্যাস।বাবা রুমালে চোখের জল মুছিয়ে দিচ্ছে।
স্কুলের গেটে অভিভাবকদের ভিড়।বাচ্চারা কেমন আছে! স্কুলে ইতি পড়ল।
ছোটকুর নীল হলুদ চকে শুরু হল অক্ষরের পথচলা।
0 মন্তব্যসমূহ