আমি ও সমকাল (পর্ব - ৩)


এতো অল্প সময় নার্সারি স্কুলে পড়লেও আমি তো জলকে ওয়াটার বলি।পেয়ারাকে বলি গোয়াভা।মায়ের তো যাচ্ছেতাই অবস্থা।ছেলেটাকে বাংলা শেখানো যাচ্ছে না।কোন একটা বাজে বাংলা মিডিয়ম স্কুলে কিছুদিন ক্লাস করলাম।অন্ধকার ঘর,বেঞ্চ, কিছু আবছায়া স্মৃতি হয়ে রয়েছে।এই তো স্মৃতি বললাম,মানে অতীত।কিন্তু সমকালই তো আমার মনে হয়।কলেজ স্কোয়ারের ছোট্ট গেটটায় এই সেদিনও দেখে এসেছি হেমন্তের রোদ্দুর খেলা করছে।তার কোন কাল নেই।অতীত নেই,বর্তমান নেই।চলে গেলে মনে হয় আসবে।আদি অনন্তকাল ধরে আসবে।কিন্তু আমি আসব না।একবার চলে গেলে আমি আসব না।আমাদের এক আত্মীয় ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কন্ট্রোলার।তিনি হেয়ার স্কুলে ভর্তির প্রস্তুতি করে দিয়েছিলেন।তখন স্কুল, কলেজ অনিয়মিত।পরীক্ষাও হচ্ছে না।চাকরি নেই।হাহাকার।এখনও কর্ম সংস্থানের গভীর অভাব।সেই অতীতও তাহলে আজকের সমকাল।

সমকালের রথে চেপে এলাম নবগ্রাম কোন্নগরে।এসেই এক নিম্নবুনিয়াদি স্কুলে বাংলায় পেলাম তেরো। তখনওমাত ভাষা জানাটা ছিল বিশেষ গৌরবের।মায়ের শিক্ষণে মদনমোহন তর্কালঙ্কারের শিশু শিক্ষা পড়তে শুরু করলাম।বর্ণ পরিচয়ের চেয়ে অকারণে শিশুশিক্ষা আমার কাছে সহজ মনে হয়েছিল।পরে যখন মদনমোহন তর্কালঙ্কার ও দীপ্যমান কাল নিয়ে উপন্যাস লিখলাম সমাগত মধুমাস নিজে নিজেই অবাক হয়েছি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ