মেয়েটি
মেয়েটি
তার চোখের কোনে পিঁচুটি
পরনে ছেঁড়া ফ্রক
ফ্রকের নিচে
ডুরি লাগানো হাফপ্যান্ট
খালি গা
চুলে এক মাথা উকুন
কিছুদিন পর হবে বয়ঃসন্ধি তার
অপুষ্ট শরীরে দুই একটি তীব্র এলাকা
বদলে যাবে
নগরসভ্যতার গোড়াপত্তনের মতো
দুর্বৃত্তগণ জোর করে খুলে ফেলবে
গিট
রক্তের লালচে গন্ধ
তলপেটে ব্যাথা
এই গল্পটির নাম- বাংলাদেশ
আধিপত্যবাদ ও অনান্য দুর্ঘটনা
এখানে কোনো স্টেশন নেই,শুধু ট্রেন আসছে
আর যাচ্ছে কোথাও চলে।
দূরে হয়তো অনন্তকাল দূরে একটি স্টেশন
রয়ে গেছে যেখানে একমাত্র অপেক্ষমান
যাত্রীর নাম ঈশ্বর যার বস্তুত অপেক্ষার কোনো দায় বা তাড়া কোনোটাই নেই।
সেই ঈশ্বর নিয়ে প্রাগৈতিহাসিক কাল ধরেই কতোইনা শুনে এসেছি গল্পকথা শাস্ত্রকথা পুরাণকথা।-- সেসব অন্য বিষয়।
এখানে যেখানে স্টেশন নেই
তবু দেখতে পাওয়া গেলো একটি পুরুষ
ও অপর এক নারী।
এই দু'জন নির্জন অন্ধকারে একসংগে ঘুমোলেই পৃথিবী মানুষে মানুষে ভ'রে যাবে।
স্বাভাবিক প্রবণতাবশত ওরা শুতে চাইছে
কিন্তু মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে একটি হায়েনা!
তাহলে জীবন অনিশ্চিত হবার সম্ভাবনা যে
থেকেই গেলো- সুতরাং আপাতত বাঁচা,
তারপর শোয়া।
এই পৃথিবী মানুষে মানুষে ভ'রে গেলে
হায়েনার কী এমন ক্ষতি- বোঝা মুশকিল!
তবে হায়েনাটি অনন্তকাল দূরের স্টেশনের মতোই ওদের শুতে যাওয়াকে আটকে রেখে দেবে অনন্তকাল-- অবস্থাদৃষ্টে এ কথা
বুঝে নিতে কষ্ট হলে তা লেখা রয়ে যাবে বেদনাপ্রধান অধ্যাদেশে।
এবং তাই, এই ঐতিহাসিক সংগমকার্যটি পরিচালিত হতে হলে একজন সাহায্যকারী
ঈশ্বর প্রয়োজন যিনি থাকেন অনন্তকাল দূরে।
নারী ও পুরুষ অনন্তকাল দূরের স্টেশনে অপেক্ষমান যে-ঈশ্বর তার জন্য অপেক্ষা করছেন।
তিনি চাইলেই কেবল মুক্তি সম্ভব
হায়েনার থাবা থেকে।
দূরবর্তী ঈশ্বরের অনিশ্চিত আগমন, নারী ও পুরুষ এবং হায়েনা-- এই দৃশ্যপট কল্পনা ক'রে
হায়েনার সহজ সংজ্ঞা হতে পারে--' হায়েনা
নিজে সংগম ক'রে থাকলেও অন্যকে
তা করতে দিতে সে কখনোই রাজি নয়!
আমরা একটি অনিশ্চিত সংগমের অপেক্ষায়
রয়ে গেলাম যেহেতু ঈশ্বর সংক্রান্ত বিষয়টি
আমরা এখনও নিশ্চিত নই!
রুপালি ক্ষরণ
তারপর কেমন ক'রে কীভাবে যেনো
জাইগোটফর্ম হয়ে গেলো,
আর আমি আটকে গেলাম এই গুহার ভেতরে।
এখানে অবশ্য খাবার জন্য জল আছে -
হোক না দুষিত তবু তো ক্ষুন্নি নিবৃত্ত হয়-
এছাড়া অন্যকিছুর ব্যবস্থা নেই বোলেই
মনে হচ্ছে আপাতত।
বাইরে প্রচন্ড দুর্যোগ মহামারী মড়ক মন্বন্তর
নব্য ইঁদুরের উৎপাত, মানুষকে পোকা বানাবার প্রকৌশল রাজনীতি, দিনমান শিল্পহীন শব্দের হল্লা আর লোকজনের মুখে
মানুষের মুখ আঁকানো মুখোশ
যদিও তারা মানুষ প্রজাতির কেউ নয়।
এসময়ে বাইরে বেরুনো ভীষণ বিপদের
মুখে গিয়ে পড়া।আর এই গুহা ছেড়ে
নির্দিষ্ট সময়ের আগে বেরুতে চাইলে
মিসক্যারেজ হয়ে বেরুতে হবে আর তা হলে আমার অস্তিত্ব ' নেই' হয়ে যাবে-- এর চেয়ে দুর্মার ভেঙে পড়বার বিষয় হলো- এখন বেরুলেই
দেখা হবে কোনো এক রুপালি নদীর তীরে
শ্রীমতি অপরূপা সেনের সংগে যে ছিলো আমার পূর্বজন্মের একমাত্র একজনা আর আসন্ন জন্মের দগদগে ক্ষত।তার চেয়ে এই ভালো - নয়টি মাস কষ্ট করে এখানেই থেকে যাই।--
জননীকে বাঁচিয়ে রাখি অন্তত!
0 মন্তব্যসমূহ