বছর ফুরিয়ে এল
। আর তিনটে দিন মাত্র । তারপরে হিসেবে ঢুকে যাবে নূতন একটা সংখ্যা । বছরের দিকে
ফিরে তাকালে চোখে পড়ে বছরটা কি পরিমাণ অকাজে কেটেছে, অতচ প্রকৃতির সুমহান সুত্র
শূন্যেই সৃষ্টি, সৃষ্টিতেই শূন্য । কিছুই হয়নি, কেবল জন্ম হয়েছে । দেহকে যেমন করে
মাতৃগর্ভে থেকে সৃষ্টি হতে হয়, মনেরও প্রয়োজন পড়ে মাতৃগর্ভে দিন যাপনের । সকলে সেই
সত্য ধরতে পারেনা, আমি পেরেছি । পেরেছি বলেই মনে করছি যে আমার নতুন জন্ম হয়েছে ।
নতুন জন্ম নিয়ে যথেষ্ট ভাল লাগছে, আবার লাগছেওনা । উভয়ই সত্য । তবে এটুকু জেনেছি
যে, সমস্ত মানবিক সৃষ্টির মূলে মনের আপনার সৃষ্টি । ২০১৮ সেজন্যে স্মরণীয় থাকবে
আমার জীবনের কাছে । গর্ভাবস্থা ঠিক কেমন ছিল সেটাই বলবো আজ ।
একসময় অত্যন্ত
দুঃখি হয়ে পড়ি । যারপর নাই দুঃখ । পৃথিবীতে সবচেয়ে পবিত্র জিনিস কী ? আত্মঘাতী
মানুষ । সেই পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিলাম । এইভাবে পার্থিব সমস্ত নোংরা সাফ হয়ে যায়,
আমি হয়ে উঠি পবিত্রতম মানুষ । পবিত্রতম দেহ, পবিত্রতম মন । তারপর শুরু হয় দুঃখ
উপশমের প্রক্রিয়া । ওষুধ সেবন থেকে শুরু করে বহুরকমের কথা শুনতে থাকি, যা কিছু
সভ্যতা আয়ত্ত করেছে এতদিনে । সত্যি বললে কাজে আসেনি । প্রথমে ভেবেছিলাম দুঃখের
কোনো কারণ নেই, অকারনে আমি কষ্ট পাচ্ছি মনে মনে । তারপর যখন কারণ খুজতে শুরু করি,
তখন কারণ হয়ে ধরা দেয় একরকমের নিঃসঙ্গতা । প্রথমে অবাক হয়েছিলাম, তারপর ধীরে ধীরে
মেনে নিতে পেরেছি, প্রত্যেকটা মানুষই ভেতরে ভেতরে ভীষণ একা । একটা মানুষের
একাকীত্ব কেউ দূর করতে পারেনা, বরং যাকে আমরা সঙ্গ ভাবি তা আসলে মনকে ক্ষণেকের
জন্য ডাইভার্ট করে ফেলা, এই ‘ক্ষণেক’ আজীবন হতে পারে কিনা তা আপাতত জানা নেই ।
সবরকমের চেষ্টা
করার পর জেনেছি দুঃখ বলে কিচ্ছু নেই, দুঃখ বলে যাকে ভয় করছি তা আসলে শান্তি ।
হ্যাঁ, শান্তি । যে শান্তির ভাবনাকে সমস্ত জড় সম্প্রদায় ভর করে বেঁচে থাকে । জীবন
যেহেতু মিথ্যা, তাই জীবনেরও উচিত শান্তির সন্ধান করা, আর শান্তি দূর মহাকাশ থেকে
নিয়ে আসতে হয়না, ঘণ্টার পর ঘণ্টা মেডিটেশন করতে হয়না । শান্তি আমাদের সবার মাঝে
সর্বক্ষন বিরাজ করে, আমরা কখনো তাকে দুঃখ বলি, কখনোবা সুখ । অথচ শান্তিকে শান্তি
বলে মেনে নিতে পারিনা ।
এভাবে আমি নূতন
জন্ম নিলাম, ক্ষুধা-তৃষ্ণাকে জয় করা যে এত সহজ হবে তা আগে জানিনি । ২০১৮ স্মরণীয়
হয়েই থাকবে ।
2 মন্তব্যসমূহ
Vai r o lekh.....
উত্তরমুছুনNice
উত্তরমুছুন